কান্না-হাসির বেলা


(১)
কান্না-হাসির বেলা
এ কে আজাদ

কৃষ্ণচূড়া রক্তে রাঙা পলাশ ফুলে আগুন,
রক্তজবার হাওয়ায় উড়ে ফেব্রুয়ারির ফাগুন।
রফিক সালাম বরকতেরা রক্ত দিলো ঢেলে,
দুখিনী এই বাংলা মা যে বর্ণমালা পেলে।
খানের দানো হানলো আঘাত ছুড়লো মরণ গুলি,
জীবন দিলো দামাল ছেলে উড়লো মাথার খুলি।
গুলির শব্দে কাঁপে আকাশ, ভিজলো বাতাস জলে,
সবুজ মাটি লাল হলো যে বুকের রক্ত গলে।
রক্ত-ভেজা মায়ের আঁচল, মা জননী কাঁদে,
শূন্য বুকে ব্যথার পাথর এক হিমালয় বাঁধে।
ব্যথার আগুন উতল হাওয়ার সুখের ফাগুন লোটে,
অশ্রু-খুনে গাছের ডালে ফুল হয়ে তাই ফোটে।
দীর্ঘশ্বাস আর ব্যথার ¯্রােতে ভাঙলো বুকের কিনার,
আগুন ফাগুন এক হয়ে সব গড়লো ব্যথার মিনার।
ব্যথার পাহার নাম নিয়েছে “শহীদ মিনার” আজ,
ছেলের রক্তে মা পেলো যে বর্ণমালার তাজ।
বর্নমালা বর্নমালা দুঃখ সুখের মেলা,
ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ কান্না হাসির বেলা।

 

(২)

বাংলা আমার বোল

মায়ের কথায় মধুর ভাষা
স্নিগ্ধ মায়ের কোল,
বাংলাদেশে জন্ম আমার
বাংলা আমার বোল।

মায়ের মুখে শেখা কথা
মনের ভাষা বুলি,
ফুলের মত পাপড়ি মেলা
স্বপ্ন দুয়ার খুলি।

সবুজ ঘেরা ছায়ার দেশে
মায়ার বাঁধন কত!
মধুর বুলি মুখে হাজার
আদর ছড়ায় শত!

খেলার মাঠে বন্ধু স্বজন
মেলার মাঠে গান,
ধানের মাঠে দখিন হাওয়ায়
মন-আবেশী তান।

নদীর বুকে কুলুকুলু
পাখির মুখে সুর,
হাজার কথা মধুর গানে
সুখের সম্মুদ্দুর।

শীতলতার গীতলতা
যেই ভাষাতে মাখা,
যেই ভাষাতে স্নিগ্ধ গাঁয়ের
গল্প-গাথা আঁকা;

যেই ভাষাতে রফিক সালাম
বরকতেরই ছবি,
যেই ভাষাতে কাব্য-গানে
স্বপ্ন আঁকেন কবি;

সেই সে ভাষা আমার ভাষা
বাংলা হৃদয়ের মাঝে,
বাংলা আমার স্নেহের ছোঁয়া
সকাল দুপুর সাঁঝে।

(৩)

বাংলা

একটা ভাষা
আমার ভাষা
তোমার ভাষা
সবার সেরা
বাংলা।

শিমুল পলাশ
কৃষ্ণচূড়া
হৃদয় উড়া
মায়ায় ঘেরা
বাংলা।

রক্ত সাগর
দিতে পাড়ি
আমরা পারি
বলল কারা?
বাংলা।

জীবন দিয়ে
ভাইরা কে কে
আনলো ডেকে
সুখের ভাষা
বাংলা।

বরকত সালাম
সবার চেনা
নির্ভিক সেনা
রফিক জব্বার
বাংলা।

বিশ্ব জোড়া
ল জনে
ল মনে
কোন্ সে ভাষা ?
বাংলা।

বাহান্নতে
রক্ত দিয়ে
জীবন দিয়ে
কেনা ভাষা
বাংলা

এ কে আজাদ, কবি, গীতিকার ও প্রাবন্ধিক। বগুড়া, বাংলাদেশ।
হোয়াটসঅ্যাপ: +৮৮ ০১৬১২ ৪৩১৩০৩


Check Also

রক্তে রাঙা পতাকা

এ কে আজাদ একটা ছেলে চোখের পাতায় স্বপ্ন কেবল আঁকতো পাখির মত ডানা যদি সেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published.