চোরের স্বর্গরাজ্যে ধুনট, পুলিশি টহল-চেকপোস্ট ব্যর্থ

: রুহুল আমিন কিবরিয়া,ধুনট উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আশংকাজনক হারে বাড়ছে চুরির ঘটনা। এই এলাকা যেন চোরের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পুলিশ নিয়মিত টহল ও সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েও এই চুরি ঠেকাতে পারছে না। থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।

তবে পুলিশ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা চুরির সঙ্গে কারা জড়িত, তা সন্দেহ করতে না পারায় তাদের লিখিত অভিযোগ তদন্তাধীনই থেকে যাচ্ছে।

জানা গেছে, গেল জানুয়ারি মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অর্ধশত চুরির ঘটনা ঘটে। তবে সবচেয়ে বেশি হয়েছে গরু চুরি। পাশাপাশি মোটরসাইকেল, ভ্যান, অটোবাইক, নলকুপ, পণ্যসামগ্রী, বৈদ্যুতিক মিটার, ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনাও ঘটতে থাকে।অনেকের বাড়ি ও দোকান থেকে গেটের তালা কেটে ঘটছে চুরির ঘটনা। এরমধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ, সরকারি চাকরিজীবী, কৃষক ও ব্যবসায়ীর বাড়ি রয়েছে।সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার রাতে শহরের সদরপাড়ার খোরশেদের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। এর আগে, ২৮ জানুয়ারি পুলিশ কনস্টেবল শিবলুর মোটরসাইকেল, সাংবাদিক আব্দুল হামিদের ৩টি ট্রান্সফরমার ও আব্দুর রাজ্জাকের নলকুপ চুরির হয়েছে।

২২ জানুয়ারি পশ্চিমভরশাহীর কৃষক হারেজ, ইয়ার বক্স, শামছুল ও শহিদুলের ঘরে সিঁধ কেটে পন্যসামগ্রী চুরি করেছে। ১৯ জানুয়ারি ডাকাত দল কালেরপাড়ার নাসিমের ঘরে ঢুকে অস্ত্রেরমুখে তিন লাখ টাকা নিয়েছে। ১০ জানুয়ারি অফিসারপাড়ার রাসেলের একটি গরু এবং ৮ জানুয়ারি বাটিকাবাড়ির তাহেরের তিনটি গরু, ৫ জানুয়ারি সুলতানহাটার দুলালের চারটি গরু, ১ জানুয়ারি কান্তনগর চরপাড়ার জাহিদুল ও হান্নানের চরটি গরু চুরি হয়েছে।

সংঘবদ্ধ চোরেরা এসব চুরির কাজে মিনি ট্রাক ব্যবহার করছে। এ কারণে পুলিশ গ্রামীণ পাকা সড়কে বসিয়েছে চেকপোস্ট।

প্রতিদিন রাত ১২টার পর সড়কে চলাচলকারী সন্দেহভাজন গাড়ি চেকপোস্টে থামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নাজুক অবস্থা হয়েছে এলাকার আইনশৃঙ্খলার। এখনো শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আসেনি আইনশৃঙ্খলা। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা। কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে নাজেহাল পুলিশ। এদিকে চুরি-ডাকাতির শিকার হয়েছেন এমন অনেকে পুলিশি সহায়তা নিচ্ছেন না। অর্থাৎ জিডি কিংবা মামলা করছেন না।

কারণ হিসেবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, থানা-পুলিশ-আদালতের ঝামেলা এড়াতে পুলিশের শরণাপন্ন হননি তারা। তবে পুলিশ বলছে, জিডি-মামলা না করলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা মুশকিল, একইসঙ্গে অপরাধীদের শনাক্ত করাও অনেক সময় সম্ভব হয় না।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘চুরিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে চান না। এ জন্য সেগুলো আর এজাহার হিসেবে নেওয়া হয় না। অনেক সময় চুরির সঙ্গে কারা জড়িত, সে সম্পর্কে বাদিরা কিছু জানাতে না পারায় তাদের অভিযোগ তদন্তাধীনই থেকে যায়।’

তবে চুরি প্রতিরোধে তিনি সড়কে ১০টি চোকপোস্ট বসিয়েছেন এবং পুলিশি টহল আরো জোরদার করার পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।