তোফাজ্জল হোসেন : বগুড়া—সারিয়াকান্দি জেলা মহাসড়কের চেলোপাড়ায় করতোয়া নদীর উপর ‘শাহ ফতেহ আলী’ সেতু’র পুনঃ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকার পর প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ভাবে এই সেতুটি পুনঃ নির্মাণ করা হচ্ছে। সোমবার (২২ মে) সকাল পৌণে ১১টায় সেতুটির পূর্বপাশে চেলোপাড়া অংশে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ‘শাহ ফতেহ আলী’ সেতু’র পুনঃ নির্মাণ কাজ এর উদ্বোধন করেন বগুড়া—৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বগুড়া সড়ক বিভাগ এই সেতুটি বাস্তবায়ন করছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে শাহ ফতেহ আলী সেতুর পূনঃনির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান সফিক, বগুড়া শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববি, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল রাজি জুয়েল, প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক একেএম আসাদুর রহমান দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাদৎ হোসেন ঝুনু, আওয়ামীলীগ নেতা প্রদীপ কুমার রায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ বগুড়ার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আমান উল্লাহ আমান, উপ—সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাত আলীসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু তার বক্তব্যে বগুড়ায় আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী। এই উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু বলেন, বগুড়ার মানুষ আগামী দিনে বগুড়ার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিবে। নৌকা হচ্ছে উন্নয়নের প্রতীক।
বগুড়া সড়ক বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালে করতোয়া নদীর উপর শাহ ফতেহ আলী সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর ফলে এই সেতুটি পূর্ব বগুড়ার সাথে পশ্চিম বগুড়ার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল। সেতুটি পুনঃ নির্মাণের প্রায় ৫৩ বছর পর সেতুটি পূণঃনির্মাণ করা হচ্ছে। কয়েক বছর আগেই দীর্ঘদিনের এই সেতুটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। ফাটল দেখা দেওয়ায় ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে সেতুটি ঝঁুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে সেতুটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই বাংলাদেশ সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সেতুটির নকশা ও অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন করে। সেতুটি নির্মাণের জন্য ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। ৬৯ মিটার দৈর্ঘ্য আর ১২ দশমিক ৩ মিটার চওড়া এই সেতুর দু’পাশে ৮ ফুট করে ফুটপাথ থাকবে। এছাড়াও সেতুর সঙ্গে পূর্বপাশে ৭৫ ফুট এবং পশ্চিমপাশে ৫০ ফুট রাস্তা তৈরী করবে বগুড়া সড়ক বিভাগ। সেতুটি হবে আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন। এই সেতুটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল এবং মাহফুজ খান লিঃ। কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী ২০২৪ সালের মে মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বগুড়া সড়ক বিভাগের উপ—বিভাগীয় প্রকৌশলী আমান উল্লাহ আমান।