বগুড়া ডেস্ক : ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের সম্মেলনে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ছাত্রীনিবাস প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর ও হেনস্তার ঘটনায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া না হলে গণপদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ নেত্রী।
এসময় দাবি মেনে নিতে তারা ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দেন এবং গতকালের ঘটনা তদন্তের যে গঠিত কমিটি গঠন করা হয়েছে তাও প্রত্যাখান করেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা ২৫ জন নেত্রীই বর্তমান কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদধারী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি। তিনি বলেন, গতকাল জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর হওয়া হামলায় জড়িতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম আমরা জানতে পেরেছি। তারা হলেন- ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নুজহাত ফারিয়া রোকসানা, আয়েশা সিদ্দিকা মিম, আর্ণিকা তাবাসসুম স্বর্ণা, শিরিনা আক্তার, সোমা মল্লিক পপি, জিনাত হাসনাইন, লিমা ফেরদৌস, আশরাফ লুবনা বিজলী আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঋতু আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন্নাহার জ্যোতি এবং ফারজানা ইয়সমিন নীলা।
তিনি আরো বলেন, গতকাল রাতে মারধরের ঘন্টাখানেক আগে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী পোস্টেড নেতৃবৃন্দরা জান্নাতুল ফেরদৌসের রুমে হামলা চালায়। এসময় তার রুমে থাকা ল্যাপটপ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আত্মসাৎ করে নিয়ে আসে। পরে হামলার সময় সহ-সভাপতি আয়েশা সিদ্দিকা মিম এবং রোকসানা জান্নাতুল ফেরদৌস এবং তার সাথে থাকা ছোট বোনের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সভাপতির হাতে তুলে দেন। এসময় তারা গলায় স্বর্ণের চেইন, ব্যাগে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা এবং ছোট বোনের হাতে থাকা আংটিও কেড়ে নেয়।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেত্রীরা বলেন, আজকে হওয়া তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছে নিশি এবং তিলোত্তমাকে। এর আগে যখন রিভার অডিও ফাঁস হয়েছে সেটিরও তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে নিশি-তিলোত্তমাকে। তারা সেই তদন্তের কোন রিপোর্ট আমাদের জানায়নি। নিশি আর তিলোত্তমার তদন্ত কমিটি আমরা মানবো না। বারবার অপরাধ করেও কেন্দ্র থেকে ইডেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এবার যদি কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে আমরা এখানে উপস্থিত ২৫ জনই গণহারে পদত্যাগ করবো। সংবাদ সম্মেলন থেকে সাতটি দাবিও জানানো হয়। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মার্জানা উর্মি দাবিগুলো পড়ে শুনান। দাবিগুলো হলো:
১. জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর হওয়া হামলার সাংগঠনিক জবাব।
২. সাধারণ শিক্ষার্থীদের হেনস্তার সুষ্ঠু বিচার চাই, ক্যাম্পাসের সকল সিসিটিভি ফুটেজ লুকানোর চেষ্টা করা যাবে না।
৩. অধ্যক্ষকে নিয়ে কটাক্ষ করার জবাব।
৪. একচেটিয়া রাজনীতি এবং চাঁদাবাজির রাজনীতি বন্ধ করা।
৫. প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৬. গণহারের প্রায় শতাধিক রুম দখলের হিসাব দেয়া।
৭. জান্নাতুল ফেরদৌসের যেসব অশ্লীল ছবি তোলা হয়েছে তা সকল নেতৃবৃন্দের সামনে ডিলেট করতে হবে এবং তার সকল জিনিসপত্র ফেরত দিতে হবে।