শিশুদের জন্য চাই নিরাপদ ইন্টারনেট


বগুড়া ডেস্ক : করোনার কারণে শিশুরাও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ক্লাস ও পড়াশোনা করছে। তবে ইন্টারনেটের যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি খারাপ দিকও রয়েছে। তাই শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেটের সুবিধা দেওয়া আমাদের সবার কর্তব্য। ইন্টারনেটের অধিক ব্যবহার আমাদের সময় নষ্ট করে। ইন্টারনেটে অনেক ধরনের গেম পাওয়া যায়। শিশুরা এসবের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। পাবজি, ফ্রি-ফায়ারের মতো গেমগুলোয় শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুক, মেসেঞ্জারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার পেছনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করছে। এতে করে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। পড়াশোনায় মনোযোগ আসছে না। ইউনিসেফের এক জরিপে বলা হয়েছে, ছেলে শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। এ জরিপে আরও একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে; ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩২ শতাংশ শিশু চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য চিন্তার বিষয়।

অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ব্যাঘাত ঘটে। সবসময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ জ্বলে, মাথাব্যথা করে, দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। বর্তমানে আমরা লক্ষ করে থাকি, শিশুদের চোখে চশমার ব্যবহার বেশি। আবার শিশুরা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সবসময় ইন্টারনেটে গেম খেলা, ভিডিও দেখা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকায় তারা মাঠে খেলতে যায় না। এভাবে তাদের নিজস্ব চিন্তাশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। আপনজনের সঙ্গে সময় কম কাটায় তারা। সবসময় ঘরে বন্দি জীবনযাপন করে, ফলে তাদের মেজাজ রুক্ষ হয়ে যায়। অনেক শিশু সাইবার ক্রাইমেরও শিকার হয়। অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে, ছবি আদান-প্রদান করে, অনেক সময় ডিজিটাল উৎপীড়নের শিকার হয়। শিশুরা ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে অবগত না হওয়ায় এমন ভুল করে থাকে। এমনকি অনেক সময় খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশায় নেশাদ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়ে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। অনেকে কিশোর অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যায়।

ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে শিশুরা অসামাজিক হয়ে পড়ছে। কারও সঙ্গে মিশতে চায় না। তারা বাঙালি সংস্কৃতিচর্চা থেকে পিছিয়ে পড়ছে। ইন্টারনেটভিত্তিক অপসংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছে। আবার অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমে পরিবর্তন আসে। তারা সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করে না এবং পুষ্টিকর খাবার খায় না। অনেক শিশু রাত জেগে ইন্টারনেট চালায়। তাদের রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। ফলে সকালের সব কাজে তাদের ব্যাঘাত ঘটে। সারাদিন ক্লান্তি অনুভব করে। তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে হবে। শিশুরা যেন অতিরিক্ত সময় ইন্টারনেটে ব্যয় না করে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে শিশুরা কীভাবে ইন্টারনেট চালায়, ইন্টারনেটে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, কাদের সঙ্গে কথা বলে। তাদের ভালো-মন্দ জ্ঞান বুঝিয়ে দিতে হবে। শিশুদের জন্য সময় দিতে হবে।


Check Also

মোটা চালও ৫০ টাকা কেজি

বগুড়া ডেস্ক : হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। বাজারে নাভিশ্বাস। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published.