ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করলেও রপ্তানি কমবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

: অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ সপ্তাহ আগে

ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলেও বাংলাদেশের রপ্তানি কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, নিজেদের সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে দেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানি খরচ আরও কমে যাবে। একই সঙ্গে দেশের ব্যবসা ও বিদেশি বিনিয়োগ আনার প্রক্রিয়া সহজ করতে সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো চালুসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের আওতায় মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইসিফোরজে প্রকল্পের পরিচালক আবদুর রহিম খান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এ দেশীয় প্রধান সুহাইল কাসিম, ঢাকা কার্যালয়ের বেসরকারি খাত বিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ হোসনা ফেরদৌস, দুবাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আল নোকবা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সুলতান এম আলবিশি, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) শামীম আহমেদ প্রমুখ।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রপ্তানি একটি পণ্যের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল এবং আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা উচিত। এটি এখন সময়ের দাবি। শুধু কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকা সম্ভব নয়। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উদ্ভাবনে যেতে হবে, নতুন বাজার খুঁজতে হবে।

তিনি বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য আমাদের দুর্নীতি দূর করতে হবে এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সহযোগী অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা আছে। যেকোনো সমস্যা সমাধান করা হবে।

রপ্তানি বৃদ্ধিসহ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অন্যান্য সুযোগ তৈরিতে বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে বিশ্ব ব্যাংক। এই তথ্য উল্লেখ করে সুহাইল কাসিম বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ হয়ে গেলে বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তা কমে যাবে। তাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে আরও শক্তিশালী হতে হবে। দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে আরও মনোযোগী হতে হবে।

বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, দেশের তৈরি পোশাকশিল্প প্রধান রপ্তানি পণ্য হলেও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি নিয়েও ভাবতে হবে। দেশের জিডিপিতে ৩০ শতাংশ অবদান রাখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।

শামীম আহমেদ আরও বলেন, দেশের প্লাস্টিক শিল্প সম্ভাবনাময়। বর্তমানে এই শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ। তাই এই শিল্প নিয়ে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

চামড়া, ফুটওয়্যার, এমপিপিই, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশলসহ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শনের লক্ষ্যে রাজধানীর আইসিসিবিতে দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে রপ্তানিযোগ্য বাংলাদেশি চামড়া, চামড়া জাতীয় পণ্য, ফুটওয়্যার, এমপিপিই, প্লাস্টিক ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ১২০টির বেশি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে। যেখানে সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্ডিয়া, ভুটান, মালদ্বীপ ও মালয়েশিয়াসহ নয়টির বেশি দেশের পঁচিশটি আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।